রণবীর চক্রবর্তী: আপনার 'আর্লি ইন্ডিয়া ফ্রম দ্য ওরিজিনস টু সার্কা ১৩০০ এডি' বইটির এক জায়গায় মহাভারত ও গীতা প্রসঙ্গে একটি চমকপ্রদ বাক্য আছে৷ আপনি লিখেছিলেন, মহাভারতের যুদ্ধে কৃষ্ণের বদলে অর্জুনের সারথি যদি হতেন বুদ্ধ, তা হলে বোধ হয় আলাদা একটি তত্ত্বোপদেশ শোনা যেত৷ কী বলতে চেয়েছিলেন আপনি?
রোমিলা থাপার: আমার সঙ্গে বোধ হয় অধিকাংশ ঐতিহাসিকই এক মত হবেন যে ভগবত্গীতা মৌর্যোত্তর পর্বের রচনা৷ তত দিনে বৌদ্ধ এবং জৈন ধর্ম যেমন সুপ্রতিষ্ঠিত, তেমনই ব্রাহ্মণ্যধর্মের সঙ্গে তাদের পাশাপাশি অবস্থানটাও বুঝতে হবে৷ এই সময়ই ভাগবত্ ধর্মের বিশেষ জনপ্রিয়তা এবং উত্থান লক্ষণীয়৷ ব্রাহ্মণ্য এবং শ্রমণসুলভ ধর্মসম্প্রদায়গুলির ভিতরে পৃষ্ঠপোষকতা এবং অনুগামী লাভের আশায় প্রতিযোগিতা চলত৷ যদিও প্রমাণিত নয় এখনও, অনেকটাই অনুমান সাপেক্ষ, কিন্ত্ত একটি অভিমত আছে যে ভগবত্ গীতা রচিত হয়েছিল বৌদ্ধ ধর্মের ব্যাপক জনপ্রিয়তা এবং অশোকের 'ধম্মনীতি'র প্রতিক্রিয়া হিসাবে৷ গত এক দশক ধরেই পণ্ডিতরা এই প্রশ্নটি নিয়ে আলোচনা করছেন৷ তাঁদের ধারণা, মৌর্যোত্তর পর্বে বেশ কয়েকটি ব্রাহ্মণ্য ধর্মাবলম্বী শাস্ত্রগ্রন্থ প্রণীত হয়৷ ব্রাহ্মণ্য ধর্মের নানা সম্প্রদায় এবং বিভিন্ন শ্রমণসুলভ গোষ্ঠীর (যেমন নাস্তিক, পাষণ্ড, বৌদ্ধ) মধ্যে যে মুক্তমনা বিতর্ক চলত, এগুলি তারই ফসল৷
অতএব, ভাবা যেতেই পারে, বুদ্ধ যদি অর্জুনের সারথি হতেন, কী বলতেন অর্জুনকে? এই কাল্পনিক প্রশ্নের উত্তরটিও কাল্পনিক, কিন্ত্ত খুবই ইন্টারেস্টিং৷ বুদ্ধ হয়তো অর্জুনকে বলতেন,--- 'এই যুদ্ধ কি সত্যিই প্রয়োজন? কীসের জন্য তুমি অস্ত্রধারণ করেছ? তুমি হয়তো রাজ্যলাভের জন্য সংগ্রামে অবতীর্ণ হয়েছ, কিন্ত্ত রাজ্য লাভ যদি করো, তোমার নিকট আত্মীয় এবং জ্ঞাতিগোষ্ঠীকে হত্যা করেই তা সম্পন্ন করতে পারবে৷' আরও প্রশ্ন থাকতে পারে৷ রাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রকাঠামোই কি শাসন চালাবার শ্রেয়তম উপায় ?
যে সময়ের কথা বলছি, তখন তো রাজ্যের পাশাপাশি 'গণসংঘ' বা অরাজতান্ত্রিক গণরাজ্যগুলিও ছিল৷ গণরাজ্যগুলির পরিচালনায় গৌতম বুদ্ধের আস্থা ছিল বলে তিনি বৌদ্ধ সংঘের পরিচালনা অনেকটাই গণসংঘের কাঠামোর আদলে তৈরি করেন৷ গণসংঘগুলির প্রতি বুদ্ধের সামগ্রিক সহানুভূতিরও প্রমাণ আছে৷ এই কথাগুলি মনে রাখলে আমার ধারণা বুদ্ধ সম্ভবত অর্জুনকে আরও একটি প্রশ্ন করতেন --- 'হিংসার প্রয়োগ কি বিশেষ কোনও মানবগোষ্ঠী বা ঘটনার উপর নির্ভরশীল ? অহিংসার সর্বজনীন প্রয়োগ কি যুদ্ধের চেয়ে শ্রেয়তর নয় ?'
কৃষ্ণের বিচারে মহাভারতের যুদ্ধ বৈধ, কারণ পাপের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা ক্ষত্রিয়ের ধর্ম৷ সেই দিক দিয়ে বিচার করলে মহাভারতের যুদ্ধ তো শুধু দু'টি ক্ষত্রিয় গোষ্ঠীর মধ্যে লড়াই, একটি গোষ্ঠী অধর্মপরায়ণ, অন্যটি ন্যায়পরায়ণ, তাই দ্বিতীয় গোষ্ঠী স্বধর্ম পালনের জন্য হিংসার আশ্রয় নিতে বাধ্য৷ তাই পাণ্ডবরা তাঁদের বর্ণাশ্রম-নির্দিষ্ট কর্তব্যটুকু পালন করছিলেন মাত্র৷ সেই কর্তব্য এ কথা বলে যে প্রতিপক্ষের সবাইকে হত্যা করাও স্বধর্মানুযায়ী দোষণীয় নয়৷
আমার ধারণা বুদ্ধ সারথি হলে সম্ভবত অর্জুনকে বলতেন যে, প্রতিপক্ষের সঙ্গে বার বার আলাপ আলোচনা করার পূর্ণ অধিকার তোমার আছে৷ তাঁদের বুঝিয়ে ভুল কাজ করা থেকে বিরত থাকার উপদেশও হয়তো অর্জুনকে দিতেন বুদ্ধ৷ কিংবা বলতেন, বিবাদের মীমাংসা যদি কোনও মতেই সম্ভব না হয়, তবে রাজ্যটিকে দ্বিখণ্ডিত করে যে যার নিজের এলাকা চিহ্নিত করে নাও৷ কিন্ত্ত, বুদ্ধ সব সময়ই যুদ্ধ এড়ানোর উপদেশ দিতেন৷ শাস্ত্রধর্মের দোহাই পেড়ে কৃষ্ণের মতো হিংসাকে প্রশ্রয় দিতেন না৷ কৃষ্ণোপদেশের থেকে বুদ্ধের উপদেশের হয়তো তৃতীয় একটি ফারাকও আছে৷ কৃষ্ণ বলছেন, কষ্টে বা বিপদে পড়লে একমাত্র আমার কাছেই শরণ নাও ('মামেকং শরণং ব্রজ '), আমিই সব কষ্টের নিরসন ঘটাব৷ ভক্তিনির্ভর ভাগবত্ ধর্মের ধারায় এটাই গোড়ার কথা৷ এর মধ্যে আপত্তিকর কিছু নেই৷ ভক্ত তো তাঁর কোনও প্রিয়, ব্যক্তিগত উপাস্য দেবদেবীর উপর পূর্ণ ভক্তিতে তাঁর যাবতীয় কষ্ট -দুঃখ -সমস্যা উজাড় করে দিতেই পারেন , এই আশায় যে সেই উপাস্য দেবতাটিই সব দুঃখের সমান্তি ঘটাবেন৷ অন্য দিকে, বুদ্ধ নিঃসন্দেহে তাঁর অনুগামীকে বলতেন , 'কে জানে কোনও ঈশ্বর আছেন কি না , যিনি তোমার সব কষ্টের অবসান ঘটাবেন৷ তুমি যদি কষ্ট পাও , তা হলে গভীর ভাবে অনুধাবন কর কেন কষ্ট পাচ্ছ , কষ্টের -দুঃখের কারণগুলি কী কী৷ তার থেকেই তোমার দুঃখ থেকে উত্তরণের উপায় খুঁজে পাওয়া যাবে৷'
অর্জুনের ভিতরে অন্তর্লীন যে সব দ্বন্দ্ব চলছিল, তার পরিপ্রেক্ষিতেই তো ভগবত্গীতার উপদেশ এবং তত্ত্ব প্রতিষ্ঠিত হল৷ এই দ্বন্দ্ব যুধিষ্ঠিরের মধ্যেও ছিল, তাই পিতামহ ভীষ্মের কাছে তাঁর সনির্বন্ধ আবেদন ছিল, কুরুক্ষেত্রের যু্দ্ধ যেন বন্ধ হয়৷
শুধু তখনই নয়, এই দ্বিধা যুধিষ্ঠিরের মধ্যে পরেও প্রকট৷ কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে জয়লাভের পর তিনি ব্রাহ্মণদের বলেছিলেন যে রাজ্যশাসনে তাঁর অভিরুচি নেই, তিনি ক্ষমতা ত্যাগ করে অরণ্যগমনে অধিকতর আগ্রহী৷ কারণ, রাজ্য শাসন মানেই নিরন্তর যুদ্ধ এবং আরও প্রাণসংহার৷ ব্রাহ্মণরা তাঁকে বোঝান যে লোকস্থিতির জন্য রাজ্য, রাজা ও প্রশাসন অপরিহার্য৷ আমার খুব চমত্কার লাগে ভাবলে যে যুদ্ধের ঠিক প্রাক্কালে এবং যুদ্ধের পরিসমান্তির পর মহাভারতে এমন দু'টি ঘটনা বর্ণিত, যা কি না যুদ্ধের বৈধতা ও প্রয়োজনীয়তা নিয়েই গভীর সংশয় ও প্রশ্ন জাগিয়ে তোলে৷ গীতা কি সত্যিই শান্তি এবং অহিংসার ভাবাদর্শ প্রচার করে, নাকি বিশেষ বিশেষ পরিস্থিতিতে হিংসাকেও অনুমোদন করে ?
রণবীর চক্রবর্তী: একটি বিষয় বেশ জটিল মনে হয়৷ যে গ্রন্থে কার্যত যুদ্ধ, ভ্রাতৃবিরোধ এমনকী ভ্রাতৃহত্যাকে অনুমোদন করা হয়েছে, সেই গীতা অহিংসার শ্রেষ্ঠ পূজারী মহাত্মা গান্ধীর কাছে কেন এত কেন্দ্রীয় গুরুত্ব পেল?
রোমিলা থাপার: আমি নিশ্চিত করে বলতে পারব না৷ আমি মহাত্মা গান্ধীর চিন্তা নিয়ে খুব বেশি জানি না, তাঁর রচনাবলীও এত ভালো করে পড়া নেই যে এই বিষয়ে যথাযথ মন্তব্য করতে পারব৷ আমার অনুমান, শেষ পর্যন্ত যে মতবাদটি বেরিয়ে আসে, তা অনেকটাই অশোকের অনুজ্ঞার মতো: অর্থাত্, যে কোনও মূল্যে অহিংসাকেই তুলে ধরা নয়৷ অহিংসা তত ক্ষণই চলবে, যত ক্ষণ তা সুনীতির উপর আশ্রয় করে আছে৷ অশোক যেমন জানাচ্ছেন যে তাঁর পুত্রপৌত্রাদিরাও যেন অহিংসার পথ অনুসরণ করেন, তবে যদি কোনও কারণে বাধ্য হয়ে হিংসার আশ্রয় নিতেই হয় , তবে তার ন্যূনতম প্রয়োগটুকুই করবেন৷ অর্থাত্, সে ক্ষেত্রে তো নিয়ন্ত্রিত অহিংসানীতির একটি মতবাদ পাওয়া গেল৷ গীতার তত্ত্ব কি এই রকম নিয়ন্ত্রিত অহিংসা নীতির কথা বলছে ? অহিংসা চমত্কার জিনিস , কিন্ত্ত অহিংসা দিয়ে যদি শেষ পর্যন্ত সমস্যার নিরসন করা না যায় , তা হলে অন্য ভাবে মোকাবিলা করতে হবে৷ এই বক্তব্যের সঙ্গে বোধহয় গান্ধীজির নীতিগত অবস্থান মেলে৷ আমার অবশ্য মনে হয়েছে , গান্ধীজি অশোক এবং তাঁর অহিংসা নীতি নিয়ে বিশেষ কোনও উত্সাহ দেখাননি৷ অন্য দিকে , লিপিতে উত্কীর্ণ অশোকের উপদেশ একান্ত জরুরি ছিল নেহরুর কাছে৷ গান্ধীজির গীতার প্রতি গভীর অনুরাগের আর একটা কারণ সম্ভবত বর্ণাশ্রম ধর্মে তাঁর গভীর এবং সামগ্রিক আস্থা৷ বর্ণাশ্রম ধর্ম সমাজকে নির্দিষ্ট ভাবে বাঁধতে চায়৷ এই শৃঙ্খলাবদ্ধ সমাজ -আদর্শের কারণেই হয়তো মহাত্মাজি গীতার উপর গুরুত্ব দিয়ে থাকবেন৷
রণবীর চক্রবর্তী: জীবনের একেবারে উপান্তে এসে অবশ্য গান্ধীজি বর্ণাশ্রম ধর্মের সারবত্তা নিয়ে সন্দিহান হয়েছিলেন৷
রোমিলা থাপার: গান্ধীজি যে 'হরিজন' শব্দটি তৈরি করলেন, তার মধ্যে বোধ হয় সনাতন সমাজ-ব্যবস্থাকে অব্যাহত রেখে তার সংস্কার করার একটা আভাস আছে৷ অতীতের বহু শতাব্দী ধরে 'নিম্ন'-জাতির মানুষের উপর যে অকথ্য অত্যাচার হয়েছে, গান্ধীজি তা আদৌ সমর্থন করেন না; কিন্ত্ত এই অত্যাচার রোধ করার উপায় কী ? সামাজিক কুপ্রথাগুলিকে আমূল উচ্ছেদ করার জন্য কি বৃহত্ কোনও আহ্বান আছে ?
রণবীর চক্রবর্তী: অস্পৃশ্যদের জন্য সমস্ত মন্দিরের দরজা খুলে দেওয়ার লক্ষ্যে গান্ধীজির সংগ্রাম স্মরণীয়৷ হয়তো এই দরজা খোলার প্রতীকী তাত্পর্যের উপরেই তিনি জোর দিতে চেয়েছিলেন৷ সে ভাবেই মহাত্মাজি কি এ রকম কিছু ভেবেছিলেন যে ধর্মীয় জগতে ও আচরণে অসাম্য দূর হলে, জীবনের অন্য ক্ষেত্রেও হয়তো কালে কালে অধীনতা ও অসাম্য অপসারিত হবে ?
রোমিলা থাপার: 'হরিজন' শব্দটি প্রচলন করে গান্ধীজি হয়তো সামাজিক সম্পর্কের ধাঁচাটিকে উল্টে দিচ্ছিলেন৷ কিন্ত্ত সামাজিক কল্যাণ ঘটাতে গেলে সনাতন সমাজের মূলধরে যে টান দিতে হয়, সেটা কি তিনি চাইছিলেন?
রোমিলা থাপার জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাসের প্রফেসর এমেরিটাস; রণবীর চক্রবর্তী জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতিহাসের শিক্ষক, সাক্ষাৎকারটি গত ১৮ জুন কোলকাতা হতে প্রকাশিত ‘এই সময়’ নামক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
গত ২৪শে মে ২০১৩ ইং উদযাপিত হল মহাকারুনিক,মহামানব,তথাগত,সম্যকসম্বুদ্ধ,গৌতম বুদ্ধের জন্ম,বুদ্ধত্বলাভ, এবং মহাপরিনির্বান এই ত্রিস্মৃতি বিজরিত মহান শুভ বুদ্ধ পুর্ণিমা.এবারও আমি ও আমার বন্ধুরা শ্রীলংকায় জন্ম নেওয়া কে.শ্রী.ধম্মানন্দ মহাথের কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত বুড্ডিস্ট মহাবিহার এ যাই,সেখানে গিয়ে আমরা য্থারীতি বুদ্ধ বন্দনা করে,মিলিতো হই এখানে অবস্তান্কারী সকল বাংলাদেশী বৌদ্ধ পরিবারের সন্তানদের সাথে(যাদের অনেকের সাথে আমার পরিচয় ছিলো,আনেকের সাথে নতুন পরিচিত হয়েছি).এখানে প্রতিবছর বুদ্ধ পুর্ণিমা উদযাপন উপলক্কে বিশাল শান্তি শোভাযাত্রা বের করা হয়.তদ্রুপ এই বছরও করা হয়েছে.শোভাযাত্রা বের হওয়া ঘন্টাখানেক পুর্বমুহুর্তে হঠাৎ করে চোখে পরে কিছু বাংলাদেশী বৌদ্ধ সন্তান ছোট্ট একটা ঢোল আর এক জোরা ঝুরির সমন্নয়ে বুদ্ধ কীর্তনের সুর তুলছে,আমরা কাছে গিয়ে দেখলাম,ওখানে স্বদেশ দাদার আমার পরিচয় ছিলো.তারপর আমরা ওই জায়গাতেই একসাথে সবাই মিলে বুদ্ধ কীর্তন সাথে সাথে বিহারে আসা সকল বাঙালী বৌদ্ধরা এসে যোগ দিলো.(এখানে একটা কথা বলে রাখা ভালো ,সেই ছোট্ট ঢোলটি আর ঝুরির শব্দ কিন্তু আমাদের সকল বাঙালী বৌদ্ধদের একত্রিত করেছে).তারপর শান্তি শোভাযাত্রা বের হলো, সাথে আমরা বাঙালী বৌদ্ধরাও সামিল হলাম সেই বুদ্ধকীর্তন নিয়ে শোভাযাত্রায়. নেচে,গেয়ে,মহানন্দে উদযাপন করলাম মহান বুদ্ধপুর্ণিমা,সেদিন আমাদের সবার আনন্দের সীমা ছিলোনা.
আমি য্খন প্রথমবার বুদ্ধপুর্ণিমা উদযাপন উপলক্কে বুড্ঢিস্ট মহাবিহারে যাই আমি বিস্ময়ে অবাক হয়ে যাই কারন বুদ্ধ পুর্ণিমার এতবড় আয়োজন আমি আমার জীবনে দেখি নাই,এখানে তথাগত বুদ্ধের জন্ম থেকে বুদ্ধত্ব লাভ,এবং পরিণির্বানের স্মৃতি বিজরিত প্রায় সব মুর্তি,ভাস্কর্য তৈরি করা হয় শোভাযাত্রার জন্য,আর এতবড় শোভাযাত্রায় কোনো গোলযোগ বা বিশৃঙ্কলা দেখি নাই.আমি অবাক হওয়ার কারন আমাদের দেশের বুদ্ধপুর্নিমা উদযাপনটা কমবেশি সবার জানা.তথাগত মহামানব বুদ্ধের এই ত্রিস্মৃতিবিজরিত মহান বুদ্ধপুর্নিমা উদযাপনে আমাদের বাংলাদেশে বড় ধরনের কোনো উদ্বেগ নেওয়া হ্য় কিনা বা আছে বলে অন্তত আমার জানার অতীত.যদিও ইহাই সকল বৌদ্ধধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব.কিন্তু আমাদের দেশে দানোত্তম শুভ কঠিন চীবর দানানুষ্ঠান কে অনেক সময় বৌদ্ধধর্মীয় প্রধান ধর্মীয় অনুষ্ঠান আখ্যায়িত করতে দেখা যায়,হয়তো এর একটা কারন নিচ্চয় আছে.যেহেতু শুধুমাত্র কঠিন চীবর দানেই আমাদের সমাজের জাদুর মুখগুলো প্রদর্শনের বড় একটা সুযোগ থাকে.যদিও আমি এখানে দেখেছি এতবড় বুদ্ধপুর্নিমা উদযাপন ওস শোভাযাত্রায় কোনো নেতা কেতার মুখ মুখ্য ছিলোনা,যদিওবা বড় বড় দাতা নাথাকতেন এত বড় আয়োজন কখনোই সম্ভব বলে আমার মনে হয়না!
এখানে এই বিহারে আমরা প্রায় ধর্মীয় অনুষ্ঠানে আসি,আমরা আজ অবধি দেখলাম না কোনো নেতা কেতার মুখ (যাহা আমাদের দেশে বিরাজমান).শুধু ভান্তেকে দেখে আসছি সবসময়, যাই হোক এই বুদ্ধপুর্নিমা শেষে ফিরে আসার পর থেকে আমার চিন্তা,চেতনায় বিরাজ করছে একটাই ধারনা>>>আমরা কি পারিনা? মহামানব তথাগত সম্যক সম্বুদ্ধের এইত্রিস্মৃতি বিজরিত মহান বুদ্ধ পুর্নিমাকে প্রধান ধর্মীয়ানুষ্ঠান হিসেবে বিশাল স্বারম্বরে উদযাপন করতে?অবশ্যই পারি,এজন্য চাই চিন্তা,চেতনার,মননশীলতার বড় পরিবর্তন.চাই পরম শ্রদ্দেয় মহান ভিক্কুসংঘের মুখ্য ভুমিকা,জানি আমার এই লেখায় কার কোনো মাথাব্যাথা হবেনা,ঠনক নরবেনা সমাজের,তবুও আশা রাখি হয়তো ধর্মের কল্যাণকামী বাংলাদেশের সকল ভিক্কুসংঘ এবং সকল বৌদ্ধজনসাধারন একদিন,একত্রিত হয়ে বিষয়টা বিবেচনা করে এর প্রতিপলিত করবেন. জয়তু বুদ্ধ সাসনম.